মানুষের মুখের অন্যতম দরকারি একটি উপাদান হলো লালা। তবে বেশিরভাগ মানুষই লালা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না।লালার সঙ্গ এভাবে বলা যেতে পারে যে, মানুষের লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রসকে লালা বা লালারস বলে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক ১২০০-১৫০০ মিলি লালা নিঃসরণ করে। লালার কারণে মুখগহ্বরে সবসময় আম্লিক অবস্থা বিরাজ করে। এর pH হলো ৬.২-৭.৪।
আজকে আমরা লালাগ্রন্থি এবং লালার কাজ নিয়ে।মানুষের মুখের দুইপাশে ৩ জোড়া লালাগ্রন্থি আছে। এসব লালাগ্রন্থি থেকে প্রতিনিয়ত লালা উৎপন্ন হচ্ছে এবং নির্গত হচ্ছে।
এ তিনজোড়া লালাগ্রন্থি হলো যথাক্রমে ১। প্যারোটিড গ্রন্থি ২। সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি ৩। সাবলিঙ্গুলয়া গ্রন্থি।
এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা উল্লেখ করা হলোঃ
i. প্যারোটিড গ্রন্থি(Parotid gland): এটা হচ্ছে তিনটি লালাগ্রন্থির মধ্যে সবচেয়ে বড়টি। এর সংখ্যা দুটি। প্রতি কানের নিচে একটি করে অবস্থান করে। প্রতিটি গ্রন্থি থেকে একটি করে নালি বের হয়ে মুখগহ্বরে উন্মুক্ত হয়।
ii. সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি (Submandibular gland): এর সংখ্যা দুটি। নিম্ন চোয়ালের কৌনিক অঞ্চলের নিচে একটি করে সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি অবস্থিত। এ গ্রন্থির নালি জিহ্বার পাশে উন্মুক্ত হয়।
iii. সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি (Sublingual gland): জিহবার নিচে একজোড়া সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি অবস্থান করে। এদের নালি জিহ্বার নিচে ফ্রেনুলাম নামক বিশেষ নালির পাশে উন্মুক্ত হয়।
আরো পড়ুনঃ
★পুরাতন ল্যাপটপ কিনার যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হয়।
★কমলো করোনা টেস্টর ফী।
★ডাইনোসরের একটি ক্ষুদ্র আত্মীয়কে আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।
★আমাদের গ্যালক্সিতে রয়েছে ৩০ টিরও বেশি এলিয়েন সভ্যতা।
★ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ক্যালিফোর্নিয়া।
★A different kinds of protest
★50 most beautiful places in Bangladesh
★যেসব দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ।
★মানুষ কি ডাইনোসরের মত বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
★ গেম অফ থ্রোনস নিয়ে বিষ্ময়কর কিছু তথ্য।
★ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু।
★ ১৫ বছরের মধ্যেই আর্কটিকের সব বরফ হলে যাবে।
★ ম্যাজিক মাশরুম পর্যবেক্ষণ করলো বিজ্ঞানীরা।
এবার জানা যাক লালায় কি কি উপাদান থাকেঃ
১। পানি
২। স্যালিভারি আ্যামাইলেজ
৩। সেডিয়াম, বাইকার্বোনেট,পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ফসফেট।
এছাড়া লালায় লাইসেজাইম নামক এনজাইম পাওয়া যায়। লালাগ্রন্থির ক্ষরণ শতকরা ৯৯.৫০ ভগ পানি এবং ০.৫০ ভাগ ইলেক্ট্রোলাইট এবং প্রোটিন ধারণ করে।
এবার দেখে নেওয়া যাক লালার কাজ কীঃ
লালা আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। লালা যেসব কাজ করে থাকে।
i. লালার প্রায় ৯৯.৫% হলো পানি। খাদ্যের স্বাদ অনুভব এবং পরিপাকের সময় বিক্রিয়া ঘটানোর জন্য পানি খাদ্যকে নরম ও সিক্ত করে। পানি মুখগহ্বরের অভ্যন্তরকে অার্দ করে। ফলে খাদ্য চর্বন এবং গলাধঃকরণে সহায়ক হয়। জিহবায় অবস্থিত স্বাদকুড়িগুলো খাদ্যের স্বাদ গ্রহণের দায়ী। এসব স্বাদকুড়িগুলো শুকনো অবস্থায় কাজ করে না। লালায় এগুলো ভিজলে খাদ্যের স্বাদ গ্রহণের কাজটি সম্পন্ন করতে পারে।
ii. মুখ, জিহবা, ঠোট লালা দ্বাড়া সিক্ত থাকায় কথা বলায় সুবিধা হয়।
iii. লালা খাদ্য চর্বন ও গলাধঃকরণে সহয়তা করে।
iv. লালায় অবস্থিত ক্লোরাইড স্যাভিলারি অ্যামাইলেজকে সক্রিয় করে।
v. লালায় অবস্থিত টায়ালিন এনজাইম রান্না করা স্টার্চের পকিস্যাকারাইডকে ভাঙ্গতে সহায়তা করে।
vi. লালা মুখের ভিতরে আম্লিক অবস্থা ৬.২-৭.৪ এর মধ্যে রেখে দাতের ক্ষয় রোধ করে।
vii. লালায় অবস্থিত লাইসেজাইম এনজাইম ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দাঁতকে রক্ষা করে।
viii. লালা সামগ্রিকভাবে মুখ অভ্যন্তর এবং দাত থেকে কোষীয় ও খাদ্যের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করে এবং মুখের নরম অংশের সংবেদনশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।